পাবনা কৃতি সন্তান একেএম ফজলুল হক যুগ্ম সচিব হলেন

পাবনা কৃতি সন্তান একেএম ফজলুল হক যুগ্ম সচিব হলেন
ছবি: এম এ খালেক খান

দৈনিক বিজয় নিউজ প্রতিনিধিঃ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মেধাবী ও চৌকস কর্মকর্তা উপসচিব একেএম ফজলুল হক তাঁর সততা, ন্যায় নিষ্ঠা, মেধা ও কর্মতৎপরতার জন্য পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সচিব হিসাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে যোগদান করেছেন। তিনি পাবনা সদর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের লক্ষীকোল গ্রামের স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব খালিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মরহুম ইব্রাহীম উদ্দিনের বড় ছেলে। তিনি ৫-বোন ও ২-ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। খালিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির পর অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় তাকে ডাবল প্রমোশম দিয়ে ৩য় শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ করে দেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। ছোটবেলা থেকেই তুখোর মেধার হিসাবে প্রথম শ্রেণি হতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বরাবরই ক্লাসে তিনি ফাস্ট বয় ছিলেন। ১৯৭৮ সালে ৫ম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় তিনি পাবনা সদর উপজেলার মধ্যে মেধাতালিকায় ২য় স্থান লাভ করেন। তিনি ৫ম শ্রেণি ও ৮ম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি লাভ করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে সদর উপজেলার দুবলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় হতে কৃতিত্বের সাথে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি ও ১৯৮৬ সালে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ হতে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাশ করে ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি কৃতিত্বের সাথে পরিসংখ্যান বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। কর্ম জীবনে তিনি সদর উপজেলার দুবলিয়া হাজী জসীম উদ্দিন ডিগ্রী কলেজে পরিসংখ্যান বিষয়ে প্রভাষক হিসাবে প্রথম চাকুরীতে যোগদান করেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি পাবনা জেলা স্কুলে গণিতের শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। শিক্ষকতাকালীন তিনি ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট পরীক্ষাতেও চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি বিসিএস পরীক্ষায় ধাপে ধাপে উত্তীর্ণ হয়ে ১৮-তম বিসিএস এর মাধ্যমে পরিসংখ্যান ক্যাডারে যোগদান করেন। চাকুরী কালীন সময়ে তিনি পরিসংখ্যান অধিদপ্তরের কিশোরগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঢাকা ও মানিকগঞ্জ জেলার উপপরিচালক হিসাবে চাকুরি করে সর্বশেষ বিবিএস এর ঢাকার প্রধান কার্যালয় ঢাকা বিভাগীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ে যুগ্ম পরিচালক হিসাবে যোগদান করেন। এরপর তিনি সরকারের উপসচিব হিসাবে পদোন্নতি পেয়ে অর্থ মন্ত্রনালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন ইড্রা ও BISDP প্রকল্পে চাকুরি করেন। তারপরে যোগদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। অতি সম্প্রতি তিনি পদোন্নতি পেয়ে যুগ্মসচিব হিসাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছেন । ব্যাক্তি জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক। তাঁর সহধর্মিণী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসমেট ও তিনিও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন এবং ২০১২ সাল পর্যন্ত চাকুরী করে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহন করেন। তাঁর ছেলে ফারহান ফুয়াদ হক নিলয় রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ হতে এসএসসি, নটরডেম কলেজ হতে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিএসসি অনার্স ডিগ্রি লাভ করে আমেরিকান একটি সফটওয়ার কোম্পানীতে কর্মরত আছে।


শুধু ছাত্র জীবনেই নয়, কর্মজীবনেও মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন মেধাবী ও চৌকস এ কর্মকর্তা একেএম ফজলুল হক। কর্মজীবনে তিনি ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড, চীন, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, জাপান, জার্মানী, নেদারল্যান্ড, তুরস্ক, মংগোলিয়া, ফিলিপাইন প্রভৃতি দেশ ভ্রমণ করেছেন। অত্যন্ত সরল মনের নিবেদীতপ্রাণ ব্যক্তি হিসাবে এলাকায় তার সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে। এলাকার মানুষের সকল ধরণের সহযোগিতার লক্ষে তিনি “প্রাণের লক্ষীকোল” নামক একটি জনহিতকর সামাজিক প্রতিষ্ঠান গঠনের মাধ্যমে সমাজ সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এছাড়াও তিনি সদর উপজেলার দুবলিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান খান ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কর্মব্যস্ততার মাঝেও প্রিয় এলাকার প্রতি ভালোবাসার টানে তিনি ছুটি পেলেই ছুটে আসেন নিজ গ্রামে। গ্রামের সহজ সরল সাধারন মানুষের সাথে মিলেমিশে গ্রামের যুবক ও তরুন প্রজন্মের শিক্ষা দীক্ষা সহ নানাবিধ জনহিতকর কাজে পরামর্শ ও সহযোগিতা করে থাকেন। সংস্কৃতিমনা, বন্ধুবৎসল, প্রাণচঞ্চল মানুষ যুগ্ম সচিব একেএম ফজলুক হক অবসরে সংগীত শুনতে এবং বই পড়তে ভালোবাসেন। তাঁর মেয়ে নিরতি হকও বাবার সাথে তাল মিলিয়ে চমৎকার গান পরিবেশন করতে পারেন। আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ায় দুবলিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান খান ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ও টিএমএসএসের ইন্টারনাল ইন্টেলিজেন্স প্রতিনিধি আব্দুল খালেক খান, ফাউন্ডেশনের কনিষ্ঠ উপদেষ্টা ৩৮ বিসিএস এর পাবনা সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক লিটন আনাম লিটু ও ফাউন্ডেশনের পরিচালক কে এম মুনির হোসাইন তাকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তার শারীরিক সুস্থতা, উত্তরোত্তর সাফল্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করেছেন।

দৈনিক বিজয় নিউজ/ এম এ খালেক খান