"ভারতকে পাকিস্তানের স্পষ্ট সতর্কবার্তা, কোনো বাধাই তাদের রুখতে পারবে না"

দৈনিক বিজয় নিউজ বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা: পারমাণবিক সংঘাতের আশঙ্কা জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁয়ে সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে গোলাগুলি বেড়েছে। পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়তে থাকায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও শঙ্কিত।
পাকিস্তানের হুঁশিয়ারি: "কেউ আমাদের থামাতে পারবে না" ঃ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ স্পষ্ট ভাষায় সতর্ক করে বলেছেন, "ভারত যদি উত্তেজনা বাড়ায়, তাহলে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ হারাবে। এমন অবস্থায় কেউই আমাদের থামাতে পারবে না।" তিনি আরও যোগ করেন, "পুলওয়ামা হামলার পর যেমন জবাব দেওয়া হয়েছিল, এবারও মোদি সরকারকে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে।"
সীমান্তে অবিরাম গোলাগুলি, উভয়পক্ষে অভিযোগ ঃশনিবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানি সেনাদের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, পাকিস্তান "উসকানিমূলক গুলিবর্ষণ" করছে, অন্যদিকে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। গত কয়েকদিন ধরে এই অঞ্চলে টানা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
জনগণ ফিরছে, কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন ঃ উত্তেজনার মধ্যে শতাধিক পাকিস্তানি নাগরিক ভারত ত্যাগ করেছেন। একইভাবে, পাকিস্তান থেকে ৬২৯ জন ভারতীয় নাগরিক ফিরে এসেছেন, যাদের মধ্যে ১৩ জন কূটনীতিকও রয়েছেন।
পারমাণবিক হুমকি ও আঞ্চলিক শান্তির উদ্বেগ ঃপাকিস্তানের রেলমন্ত্রী হানিফ আব্বাসী সরাসরি ভারতকে লক্ষ্য করে বলেন, "ভারতের দিকে ১৩০টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র তাক করা আছে। শাহিন ও ঘৌরি মিসাইল প্রস্তুত রয়েছে।" তিনি সিন্ধু নদীর পানি বন্টন ইস্যুতেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। অন্যদিকে, ভারতীয় নৌবাহিনী আরব সাগরে অ্যান্টি-শিপ মিসাইল পরীক্ষা চালিয়ে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করেছে।
আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ ও শান্তির প্রচেষ্টাঃ ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে সংঘাত প্রশমনের চেষ্টা করছেন। তিনি পহেলগাঁ হামলার নিন্দা জানালেও নিরপেক্ষ তদন্তের ওপর জোর দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, "ভারত-পাকিস্তানকে নিজেরাই তাদের বিরোধ মেটাতে হবে।"
কাশ্মীরে ভারতের অভিযান ও মানবাধিকার উদ্বেগঃ পহেলগাঁ হামলার পর কাশ্মীরে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী বহু বাড়িঘর ধ্বংস ও গ্রেফতার কার্যক্রম চালিয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, নিরপরাধ পরিবারদেরও হয়রানি করা হচ্ছে।
লন্ডনে দূতাবাসে হামলাঃ উত্তেজনার ছোঁয়া বিদেশেও পৌঁছেছে। লন্ডনে পাকিস্তান হাইকমিশনে একদল ভারতীয়র হামলায় জানালা ভাঙা হয়েছে এবং দূতাবাসের দেয়ালে রং ছিটানো হয়েছে। এর জবাবে পাকিস্তানপন্থীদের পালটা বিক্ষোভ হয়েছে।
শান্তির আহ্বান, কিন্তু উত্তপ্ত পরিস্থিতিঃ পারমাণবিক সংঘাতের আশঙ্কা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায় সতর্ক থাকলেও, উভয় দেশের নেতৃত্বের কঠোর বক্তব্য পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে। এখন প্রশ্ন—এই সংকট কি আরও বাড়বে, নাকি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শান্তি ফিরিয়ে আনবে?
দৈনিক বিজয় নিউজ/ এমই